আইন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করাই সরকারের মূল উদ্দেশ্য - রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক জাগরণ ডট নিউজ

আপডেট: নভেম্বর ১৫, ২০১৯ ২৩:৫৭

দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন "এমনিতে গণমাধ্যমের কোনো স্বাধীনতা নেই। দেশে যা ঘটে, যত অপকর্ম, দুর্নীতি হচ্ছে তার সিকিভাগও প্রকাশ পাচ্ছে না। তারপরও একের পর এক কালো আইন তৈরি করছে সরকার।"

১৫ তারিখ  শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দলের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে রিজভী এ দাবি করেন। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার দলটির কার্যালয়ের সামনে শেষ হয়।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো গণবিজ্ঞপ্তিকে নিয়ন্ত্রণমূলক উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না বলে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য যথাযথভাবে যাচাই করে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে এ গণবিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। সরকারি এ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণমূলক। মূলত সরকারদলীয় লোক ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের খবর যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্যই এ আদেশ জারি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘লোক দেখানো দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে কিছু ছিঁচকে দুর্নীতিবাজের নাম প্রকাশের পর গণমাধ্যমে সরকারের শীর্ষ দুর্নীতিবাজের তালিকা প্রকাশ হওয়ার আতঙ্ক থেকে এ আদেশ জারি করা করা হয়েছে। বার বার কালো আইন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।’

আওয়ামী লীগের নেতাদের সিন্ডিকেটের কারণে  দাম বাড়ছে বলে দাবী করেন রিজভী।এছাড়া পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার দাবীও করেন তিনি।তিনি বলেন,‘ ‘পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের কেজি ডাবল সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। একদিনেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০-৬০ টাকা। প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। লাগামহীন বেড়েই চলেছে। দাম আর কত বাড়বে এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছেন না। বরং সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে শিল্পমন্ত্রী যেদিন বললেন বাজার নিয়ন্ত্রণে, তার পরদিনই এক লাফে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়ে যায় কেজিতে। মন্ত্রীর বক্তব্যের পর পেঁয়াজের দাম আরও বেড়েছে।’

তাঁদের বক্তব্য সিন্ডিকেটকে উসকে দিচ্ছে দাবি করে রিজভী প্রশ্ন করেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গতবছর থেকে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে আছে, তা চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি। তাহলে এভাবে লাগামহীনভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে কেন?

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ মনে করে পেঁয়াজ নিয়ে যে সিন্ডিকেট লুটতরাজ চলছে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো মন্ত্রী-এমপি সরাসরি জড়িত। এ কারণে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলছে। অবিলম্বে আমরা ব্যর্থ মন্ত্রীদের পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।

প্রসঙ্গত, ১৪ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ শাখা থেকে একটি গণবিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। যেখানে  গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে তথ্য যথাযথভাবে যাচাই করে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ করা হয়।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘সারা শরীর ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। বিএনপি চেয়ারপারসনকে কোনো প্রকার চিকিৎসাই দেয়া হচ্ছে না। গত ৮ দিন তার কাছে কোনো চিকিৎসক যাননি। জরুরি বিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা না দিলে তার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। আমি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি।