শিরোনাম
অনলাইন ডেস্ক জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: মার্চ ৩১, ২০২০ ১৬:২০
করোনাভাইরাস
নিয়ে সরকারি ব্রিফিং আর বাস্তব চিত্রের আকাশ-পাতাল ব্যব্ধান বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়
থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ অভিযোগ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন,
“করোনাভাইরাস মহামারি রূপ নিয়েছে বিশ্বে। দুইমাস পার হয়ে গেলেও আমাদের সরকার এই সমস্যার
দিকে কোনো নজর দেয়নি। উপদ্রুত দেশগুলো থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনকারীদের বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণে কোয়ারেনটাইন করার সরকারি ব্যর্থতা প্রমাণ করে যে, সমন্বয়হীনতা
ও প্রস্তুতির অভাব দেশকে কত বড় বিপদে ফেলতে পারে।’
তিনি
বলেন, ‘মহামারি মোকাবিলায় সকারের কোনো প্রস্তুতি
নেই। উপসর্গ দেখা হলে রোগ শণাক্তকরণের ব্যবস্থাপনা নেই। চিকিৎসকদের রক্ষার ব্যবস্থা
নেই, নেই পর্যাপ্ত মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও ভ্যান্টিলেটর! পরীক্ষা না করেই সরকার
আক্রান্তের সংখ্যা জানাচ্ছে সবাই কে, এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারেনা। সরকারের পক্ষ
থেকে তানা দুই দিন বলা হচ্ছে এশে কোনো করোনা রোগী নেই।‘
‘অথচ
পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনসহ মিডিয়ায় প্রতিদিন সর্দি, জ্বর, কাশিতে মারা যাওয়ার খবর দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের
মৃত্যুর সংবাদ ছাপা হয়েছে আজকের খবরের কাগজে। এরমধ্যে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে একজন নারীসহ মারা গেছেন দুইজন। ঠাকুরগাঁওয়ের এক অসুস্থ ছেলেকে
নিয়ে পাঁচ হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা পাননি অসহায় পিতা’— অভিযোগ রিজভীর।
তিনি
বলেন, ‘সরকারি ব্যবস্থাপনায় খিলগাঁও তালতলার গোরস্থানে গোপনে লাশের জানাজা-দাফন করা হচ্ছে। যারা মারা যাচ্ছেন তাদের বাড়ি লকডাউন করা হচ্ছে। করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ধর্ণা দিয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে। ইলেকট্রনিকস, প্রিন্ট মিডিয়ার খবরের সঙ্গে সরকারের ব্রিফিংয়ের আকাশ-পাতাল ব্যবধান।’
রিজভী
বলেন, ‘বর্তমান সরকারের পলিসি জনগণের কাছে একদম পরিষ্কার। নো কিট, নো
করোনা। নো টেস্ট, নো
করোনা। নো পেশেন্ট, নো
করোনা।’
তিনি
বলেন, ‘যে পলিসি করে
ইরান ও ইতালি সরকার
তাদের দেশের সর্বনাশ করেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব থেকে। আমরাও সেই লুকানো পলিসি দিয়েই সবকিছু ম্যানেজ করতে চলেছি! উল্টা প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকারের এই লুকানো পলিসি
যাতে কেউ প্রকাশ না করতে পারে,
তার জন্য নানা রকমের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
রিজভী
বলেন, ‘জাতির মহাবিপদের মুহূর্তে দুর্যোগ মোকাবিলার কোনো সমন্বিত উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো
সরকারের মিথ্যা সাফল্যের বন্দনায় মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা
এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য জনগণকে চিন্তিত, ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে।’
তিনি
বলেন, ‘দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর তিনসপ্তাহ অতিবাহিত
হয়েছে। এরই মধ্যে দেশে শুরু হয়েছে ভাইরাসটির কমিউনিটি ট্রান্সমিশন। এ অবস্থাকে সরকার
স্বল্পপরিসরে সামাজিক সংক্রমণ বলে উল্লেখ করেছে। এখন পর্যন্ত সংক্রমিত রোগীদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত করে পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা সবার পরীক্ষাও হয়নি। এই অচিহ্নিত লোকগুলোই
ভাইরাসটি সমাজে জ্যামিতিক হারে ছড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে।’
তিনি
বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বারবার বলে আসছে, করোনা আক্রান্তদের শনাক্ত করতে যত বেশি সম্ভব
পরীক্ষা করতে হবে। তাতে কমবে সংক্রমণের মাত্রা। দ্রুত পরীক্ষা করার বন্দোবস্ত থাকায় সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়ায়
সংক্রমণ তেমন ব্যাপক আকার নিতে পারেনি। আর এই সুযোগ
না থাকার ফলেই ইতালি, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, দ্রুত চিহ্নিত না করতে পারলে
সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিল।’
‘সেক্ষেত্রে
বাংলাদেশেও পর্যাপ্ত পরীক্ষা করার সুযোগ না থাকায় দিন
দিন বাড়ছে ঝুঁকি। সরকার বাসা থেকে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার কথা বললেও কোনো অগ্রগতি নাই। পুরো ব্যবস্থাপনা হলো-পানিতে হাল বিহীন নৌকার মতো’— বলেন রিজভী।
তিনি
বলেন, ‘দীর্ঘদিন সময় পেয়েও জেলা পর্যায়ে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সরঞ্জামাদী সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিলো সরকারের। সে দায়িত্ব পালনে
তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়লে মহাবিপর্যয় নেমে আসবে।’
যত
দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা এবং ভাইরাসের প্রকোপ যাতে না বাড়ে তার
জন্য সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘কিছু কিছু এলাকায় রোগ ও রোগীর সংখ্যা
বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন
অনুযায়ী তাৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকায় রোগ
নির্ণয়ের পরীক্ষা বা টেস্ট কিট
বাড়াতে হবে; রোগীদের কোয়ারেনটাইন ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা
করতে হবে; সর্বোপরি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য জনবল বাড়াতে হবে। টেস্ট কিটের বর্তমানে যেহেতু স্বল্পতা আছে তাই প্রয়োজন ও প্রায়োরিটি দিয়ে
এর সরবরাহ করতে হবে।’
তিনি
বলেন, ‘লকডাউনের সময়সীমা দুটি ইনকিউবেশন পিরিয়ড অর্থাৎ ২৮ দিন পর্যন্ত
হতে হবে। কেস যদি কমতে থাকে তবে লকডাউনের সময় কমতে পারে এবং ২৮ দিনের আগে
যদি রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে তবে লকডাউন আরও বাড়াতে হবে। চীনে এ লকডাউন কার্যকর
হওয়ার কারণেই রোগের বিস্তৃতি কমে গেছে।’
অবিলম্বে
দেশের সব জায়গায় বিনামূল্যে
টেস্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কিটসহ বিভিন্ন সামগ্রী সরবরাহ ও তার ব্যবস্থাপনা
নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাস্ক, সাবান, স্যানিটাইজার জোগান নিশ্চিত করতে হবে। কিট তৈরির কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে দ্রুত খালাস ও কর মওকুফের
ব্যবস্থা করতে হবে। কোয়ারেনটাইনের জন্যে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে বড় হোটেল-মোটেল-রিসোর্টসহ উপযোগী ভবনগুলো অস্থায়ীভাবে ব্যবহারের জন্যে নির্দিষ্ট করতে হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্টেডিয়াম, জিমনেসিয়াম, খালি ভবনে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে।’
ডাক্তার-নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপদ পোশাক
ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীদের দীর্ঘ মেয়াদী স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্যে দ্রুত প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে। দেশের পোশাক কারখানা ব্যবহার করে
ফায়ার সার্ভিসের লোকবল ১৬ হাজার থেকে ২৫ হাজারে উন্নীত করার জন্য এর সাংগঠনিক কাঠামো বিস্তারিত
আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির পক্ষ থেকে চারটি শর্ত তোলা হয়েছে। দলীয় সরকারের বিস্তারিত
কুমিল্লা- ৭ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিস্তারিত
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বিস্তারিত
''অন্ধ সমালোচনা আর বিষোদগারের রাজনীতি বিএনপির জন্য ফ্রাংকেনস্টাইন হয়ে নিজেদেরই আঘাত বিস্তারিত
পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সংসদীয় কার্যক্রম সম্পর্কে দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতি বিস্তারিত
বিএনপির আন্দোলনের হাঁকডাককে আন্দোলন-বিলাস মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিস্তারিত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিস্তারিত
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বিস্তারিত
© Copyright JAGORON.NEWS
Developed By Muktodhara Technology Limited