রোববার থেকে জোন ভিত্তিক লকডাউন
নিজস্ব প্রতিবেদক জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: জুন ৬, ২০২০ ২২:৩১
মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণের কেন্দ্র বিবেচনা করে রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক লকডাউন শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল উপদেষ্টা কমিটি ঢাকার যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৩০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী আছে, সেই সব এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে লকডাউনের পরামর্শ দিয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, রোববার এ বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দেবেন। লকডাউনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
ঢাকার বাইরে যেসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১০ জন করোনা এ আক্রান্ত সেসব এলাকাকে লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি।
এর চেয়ে কম আক্রান্ত এলাকাগুলো রয়েছে সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে হলুদ এবং সবুজ জোনে ভাগ করা হয়েছে।
মহামারীর বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় সাধারণ ছুটি শেষে ৩১ মে থেকে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর হারের সর্বোচ্চ থেকে সর্বনিম্ন হিসাবে দেশকে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে ভাগ করে করণীয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানী ঢাকার দুটি ওয়ার্ড লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ওয়ার্ড দুটি হচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড (ওয়ারী) ও উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ড (ধানমন্ডির রাজাবাজার)। রোববার সকাল থেকে এ দুটি ওয়ার্ড লকডাউন ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।
জানতে চাইলে উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কোন ওয়ার্ডকে কীভাবে লকডাউন করতে হবে তা নিয়ে এরই মধ্যে আমি আমাদের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আর মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের যে কনফারেন্স হয়েছে সেখানেও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। আমরা তাদের জানিয়েছি আমাদের যেসব ওয়ার্ডে ৫০০ জনের বেশি আক্রান্ত রয়েছে সেসব ওয়ার্ড লকডাউন করতে। কিন্তু তাতে তারা রাজি ছিলেন না। পরে ওয়ারী এলাকাকে করার প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ড লকডাউন করতে আমাদের কাছে যে ধরনের প্রস্তাব আসবে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত। আমাদের কাউন্সিলরদের মাধ্যমে এটা বাস্তবায়ন করতে চাই। তাদের সঙ্গে যেসব লোকজন থাকেন তারাই এটা বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট। এজন্য অর্থনৈতিকসহ যে পরিমাণ সাপোর্ট দরকার আমরা সব করবো।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান জানান, প্রাথমিকভাবে এই লকডাউন পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। রোববার থেকে এলাকাভিত্তিক লকডাউন জারি করা হতে পারে। ওয়ারী ও রাজাবাজার এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে কঠোর লকডাউন জারি হতে পারে। প্রতি লাখে ৩০-৪০ জনের বেশি আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে এবং এসব এলাকাতেই লকডাউন জারি করা হবে।
এসব এলাকা থেকে কাউকে বের হতে দেয়া হবে না এবং রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় কাউকে প্রবেশও করতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
তবে, এখনও এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপুলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও জোনের ডেপুটি কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, ওয়ারী ও রাজাবাজার এলাকায় লকডাউন জারি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে, এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি।
ডিএমপি’র ওয়ারী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার হান্নানুল ইসলাম জানান, তারাও এ বিষয়ক কোনো নির্দেশনা এখনও পাননি।