৪০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল ভাসান চর যাচ্ছে শনিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০ ১২:২৫
বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠা ভাসান চর আবাসন প্রকল্প দেখার জন্য ৪০ সদস্যের
রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলকে শনিবার সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনী
বিভাগের তত্বাবধানে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা ভাসান চর যাচ্ছে বলে কক্সবাজারের
শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার আরআরআরসি অফিস সূত্রে জানাগেছে।
প্রতিনিধি
দলে থাকছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যম্পের হেড মাঝি, মাঝি এবং
মসজিদের ইমাম। তারা ভাসান চর পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার ফিরে রোহিঙ্গাদের
কাছে সেখানকার অবস্থা বর্ণনা করবে।
আরআরআরসি
মাহবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সরেজমিনে ভাসান চর
আবাসন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। সেখানে থাকা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে
অবহিত হবেন।
এটি মুলত একটি মোটিভেশনাল
কার্যক্রম উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের কাছে ভাসান চর
পরিস্থিতি অবহিত হয়ে শরনার্থী শিবিরের রোহিঙ্গারা ভাসান চর যেতে আগ্রহী
হবে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যদেরকে
কক্সবাজার থেকে সড়ক পথে চট্টগ্রাম নিয়ে আসাহবে। তারপর নৌবাহিনীর জাহাজ যোগে
তাদেরকে ভাসান চরে পাঠানো হবে।
বঙ্গোপসাগরের
ভাসান চরে সরকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ
করেছে, যাতে কমপক্ষে ১লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করতে পারবে। আবাসন প্রকল্প ঘিরে
প্রায় ১৩ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ নির্মাণ করা হয়েছে।
একই সাথে ১২০টি সাইক্লোন সেল্টার, প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও চিকিৎসা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
কিন্তু
আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ও জাতিসংঘের সম্মতি না থাকায় রোহিঙ্গাদের
কক্সবাজার থেকে ভাসান চর স্থানান্তর স্থগিত রাখা হয়েছে। কক্সবাজারের
ঘিঞ্জি শরনার্থী শিবিরের পরিবর্তে তুলনামূলক ভালো ও খোলামেলা স্থানে
রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগি হিসেবে
প্রত্যাশা করছে সরকার।
সংস্তাগুলো সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এবং সেচ্ছায় স্থানান্তরের শর্ত আরোপ করেছে।
বর্তমানে
৩০৩জন রোহিঙ্গা ভাসান চরে বসবাস করছে, যারা বিভিন্ন সময় সমুদ্র পথে
মালয়েশিয়া পাচারের সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে বঙ্গোপসাগরে উদ্ধার হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এসব রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও
চিকিৎসার মত মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণ করছে।
বর্তমানে
কক্সবাজারের ক্যাম্পসমূহে কমপক্ষে ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি ক্যাম্পে তারা নানা ধরনের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
এছাড়া ঘনবসতি পূর্ণ হওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের অপরাধী চক্র সেখানে অধিপত্য
বিস্তার করছে। এসব কারণে রোহিঙ্গাদেরকে তুলনামূলক ভালো আবাসনে স্থানান্তর
প্রয়োজন বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে।
আরআরআরসি
মাহবুবুল আলম বলেন, রোহিঙ্গা রাজি হলে যে কোন সময় তাদের ভাসান চরে পাঠানো
হবে। সেখানে কক্সবাজারের চেয়েও অনেক ভালো ভাবে তারা বসবাস করতে পারবে।
প্রতিনিধি দল কক্সবাজার ফিরলে আবারো রোহিঙ্গাদেরকে ভাসান চরে পাঠানোর উদ্যোগের চিন্তাভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।