পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান ও জরিমানার প্রতিবাদে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের আড়তে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আড়তদাররা দোকান বন্ধ রেখেছেন। ফলে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের এ বাজাওে পেঁয়াজের ৫৪ টি আড়তে বেচা-কেনা বন্ধ রয়েছে।

সকালে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় বিক্ষোভও করেছেন। তবে পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য পণ্যের আড়তগুলোতে স্বাভাবিক লেনদেন চলছে।

হামিদ উল্যাহ খাঁন মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইদ্রিস জানান, সকাল থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের আড়ত খোলেননি। খাতুনগঞ্জের ৫৪ টি পেঁয়াজের আড়তের সবগুলোই বন্ধ রয়েছে।  এটা সমিতির কোনো কর্মসূচি নয়। ব্যবসায়ীরা নিজ থেকেই দোকান খুলছেন না। রোববার জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্টের অভিযানে গণহারে জরিমানা করার প্রতিবাদে আড়তদাররা আড়ত খুলছেন না।

তিনি বলেন, আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছেন। তারা যে দর নির্ধারণ  করে দেন, কমিশন এজেন্ট হিসেবে আমরা শুধু সেই দরে বিক্রি করি। তাই দাম বৃদ্ধিতে আমাদের কোন দায় নেই। আমদানিকারকরা আমাদের পেঁয়াজের মূল্য সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রও দেন না।

তিনি জানান, সন্ধ্যার পড় পেঁয়াজের আড়তগুলো খোলার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাজার স্থিতিশীল রাখতে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে  রোববার অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত।

এ  অভিযানে অযৌক্তি মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা অনিয়ম পাওয়ায় ১০ আড়তদারকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন আক্তার ও উমর ফারুক অভিযানে নেতৃত্ব দেন।

চট্টগ্রামে গত কয়েকদিন থেকেই অস্থিও হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। মাসখানেক আগেও যে পেঁয়াজ খুচরায় কেজিপ্রতি ২০-২৫ টাকা বিক্রি হয়েছে, তা এখন ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরার মতো পাইকারি বাজারেও দাম বাড়ানো হয়েছে।

 ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে বিভিন্ন অনিয়ম ও ক্রয় ইনভয়েস না রেখে নিজেদের মতো মূল্য বৃদ্ধি করায় মেসার্স বরকত ভান্ডারকে ১০ হাজার টাকা, মেসার্স গোপাল বানিজ্য ভান্ডারকে ১০ হাজার টাকা, মেসার্স হাজী মহিউদ্দিন সওদাগরকে ১০ হাজার টাকা, মেসার্স সেকান্দার এন্ড সন্সকে ১০ হাজার টাকা, মোহাম্মাদীয়া বানিজ্যালয়কে ১০ হাজার টাকা, মোহাম্মদ জালাল উদ্দীনকে ১০ হাজার টাকা, গ্রামীণ বাণিজ্যালয়কে ৫ হাজার টাকা, আরাফাত ট্রেডার্সকে ৫ হাজার টাকা, মেসার্স বাগদারিক কর্পোরেশনকে ৫ হাজার টাকা ও শাহাদাত ট্রেডার্সকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

নির্বাহী ম্যাজিজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক জানান, আড়তদাররা ব্যবসায়িক কাগজপত্র নিজেদের কাছে রাখেন না। আমদানিকারক তাদের ফোন করে যে দামে বিক্রি করতে বলে, তারা সেই দামেই বিক্রি করে। কোনো নিয়ম কানুন মানা হচ্ছে না। একেকজন একেক দামে বিক্রি করছে। দামটা একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত। কোথাও কোথাও কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। আড়তদাররা বলছে, তারা কমিশনে  পেঁয়াজ বিক্রি করে। তাই আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেয়, সে দামেই তাদের বিক্রি করতে হয়।

তিনি বলেন, আমরা আড়তদারদের সতর্ক করেছি। পেঁয়াজের চালানের আমদানি কাগজপত্র রাখতে বলেছি। ভবিষ্যতে আরও অভিযান চালানো হবে।

#  এন ইউ