শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২০ ১৮:৩৭
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, চট্টগ্রামের সমন্বিত উন্নয়নের জন্য সেবা সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য।
তিনি শনিবার (২৮ নভেম্বর) দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত চট্টগ্রামের উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় এ মন্তব্য করেন।
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন-চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। একই সাথে সারাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে যেসব সম্ভাবনা রয়েছে তারও উন্নতি হবে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই চট্টগ্রামের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা, লজিস্টিক ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ কাজে লাগাতে হবে, পরিবেশের ভারসাম্য বিবেচনা করতে হবে এবং একই সাথে উন্নয়ন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। মিরসরাই শিল্প নগরে প্রায় ৩০ লক্ষ লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। কক্সবাজার থেকে কর্ণফুলী টানেল হয়ে মিরসরাই পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ করা হলে তা পর্যটনসহ লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ আলোচনা সভার প্রস্তাবনাসমূহ সম্মিলিতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান।
মন্ত্রী বলেন-বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, হালদা নদী থেকে পানি নিয়ে মিরসরাই অঞ্চলে সরবরাহ করা হলে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননের ক্ষেত্রে কোনরূপ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বৃষ্টি ও কাপ্তাই হ্রদ হতে নেমে আসা পানি সরাসরি সাগরে চলে যায়। এই পানি সংগ্রহ করে শিল্পায়নে ব্যবহার করা হলে তা মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে ১২০ কোটি লিটার পানির চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন বিকল্প উৎস হতে পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করা হবে বলে অবহিত করেন। মন্ত্রী এক্ষেত্রে হালদার পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে পানি সংগ্রহ করার কথা জানান।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে ৮৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন সমস্যা থাকতে পারে। তিনি ভবিষ্যৎ উন্নয়ন বিষয়ে সমীক্ষা করে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সেবা সংস্থাসমূহের মধ্যে চেম্বারের তত্ত¡াবধানের সুসমন্বয় নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও বাংলাদেশ ইকনোমিক জোনস অথরিটি (বেজা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ. বি. এম. আজাদ, এনডিসি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ জহিরুল আলম দোভাষ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম. এ. সালাম, চিটাগাং চেম্বার পরিচালক মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), এস. এম. আবু তৈয়ব, অঞ্জন শেখর দাশ, মোঃ শাহরিয়ার জাহান, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন ও সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী (বাবুল), বিকেএমইএ’র প্রাক্তন পরিচালক শওকত ওসমান, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোঃ জাফর আলম ও জিপিএইচ ইস্পাতের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুল ।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন সাপেক্ষে চট্টগ্রাম এশিয়ার ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু এবং বিনিয়োগের আদর্শ গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে। তিনি এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম জাপানের বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ (বে অব বেঙ্গল গ্রোথ ট্রায়াঙ্গেল)’র একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিধায় এর উন্নয়নের জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থাৎ আগামী ২০ বছরের একটি ভিশন প্ল্যান তৈরী করা এবং সেটি বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করে কার্যকর বাস্তবায়ন দাবী করেন।
চেম্বার সভাপতি চট্টগ্রামের অপার সম্ভাবনার প্রসংগ উল্লেখ করে বছরের পর বছর কিছু জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়ে তা সমাধানের উপর জোর দেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে আন্তরিক ও সহায়ক ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি বাস্তবায়নে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি, অনতিবিলম্বে বে-টার্মিনাল নির্মাণ, পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিং, চট্টগ্রাম ব্যবসায়ী ও নাগরিকদের সুরক্ষা এবং কার্যক্ষেত্রের সক্ষমতা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন প্রকল্পগুলো যথাযথ তদারকির উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ অতিথি এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন-দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম টানেল কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে। মিরসরাই শিল্পাঞ্চলসহ চট্টগ্রামের বাইরেও শিল্পের প্রসার ঘটছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ হলে মাদারীপুর-ফরিদপুরসহ ঐ অঞ্চলে শিল্প সম্প্রসারণ হবে। কুমিরা নৌবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মেরিন ড্রাইভকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। হালদা নদী থেকে পরিবেশ অক্ষুন্ন রেখে কিভাবে শিল্পের জন্য পানি সংরক্ষণ করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে বলে সিনিয়র সচিব জানান।
বিশেষ অতিথি পবন চৌধুরী বলেন-চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সরকার অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে। মিরসরাই শিল্পনগর, সীতাকুন্ড, ফেনী, নোয়াখালী শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি স›দ্বীপেও ১৩ হাজার একরজুড়ে শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে যা পর্যায়ক্রমে লাকসাম-কুমিল্লা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে ১৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। মিরসরাই জোন থেকে ৩০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ বেজা বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আগামীতে ১০টি বন্দরের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে বেজার মাধ্যমে ৩২টি সেবা একযোগে প্রদান করা হয় উল্লেখ করে তিনি হালদা, কর্ণফুলী ইত্যাদি নদী বাঁচানো, প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা এবং একই সাথে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ইত্যাদি কর্মকান্ড একসাথে পরিচালনা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম বন্দরের টেইলার, কাভার্ডভ্যান, ট্রাক ইত্যাদি পরিবহনের জন্য পৃথক লেনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।
চট্টগ্রামের সাথে মিরসরাই, দোহাজারী ইত্যাদি রুটে আরও ট্রেন পরিচালনা করা, শিল্প কারখানায় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ট্যারিফবিহীন অনুমতি প্রদানের ব্যবস্থা বিবেচনা, শের শাহ কলোনী, হালিশহর কলোনী ইত্যাদিতে হাইরাইজ বিল্ডিং নির্মাণ করে আবাসন সমস্যা সমাধান, রেল ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও বিভিন্ন সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়সাধন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
অন্যান্য বক্তারা পানির পাশাপাশি স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার জন্য প্রকল্প প্রণয়ন, শিল্প নগরের কর্মীদের জন্য লাকসাম-কুমিল্লা পর্যন্ত কমিউটার ট্রেনের ব্যবস্থা করা, আইটি খাতের জন্য পৃথক ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন তৈরী করা, সরকারি পরিত্যক্ত জুট মিল, টেক্সটাইল মিল ইত্যাদি সংস্কার করে নতুন শিল্প স্থাপন, টেকসই রাস্তা নির্মাণ, স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ, পশ্চাৎ সংযোগে সক্ষমতা বৃদ্ধি, রেলের মাধ্যমে কন্টেইনার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, নতুন নতুন আইসিডি স্থাপন, পার্কি বিচ রোড সংস্কার ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে পর্যটনকে উন্নত করা, বহদ্দারহাট থেকে ইপিজেড পর্যন্ত পর্যাপ্ত ফুটওভার নির্মাণ, কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলপথে ও নদীপথে যোগাযোগ উন্নয়ন, সীতাকুন্ডে বেসরকারি বা পিপিপির আওতায় জেটি নির্মাণ, মিরসরাইয়ে এসএমই খাতের জন্য আলাদা জোন তৈরী করা, চট্টগ্রাম মহানগর ও মহানগরের বাইরে প্রয়োজনীয় বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, রিং রোডের সাথে ইপিজেড এর সংযোগ সড়ক নির্মাণ, উন্নয়নের জোনভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ, ওয়ান সিটি টু টাউন কনসেপ্ট’র বাস্তবায়ন, চট্টগ্রামের সাথে অন্যান্য জেলাকে সম্পৃক্ত করা, জাতীয় পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমন্বয় সেল গঠন করা, চট্টগ্রামের বাইরে আলাদ গার্মেন্টস পল্লী নির্মাণ, স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান ও চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্যাংকের আঞ্চলিক দপ্তরের ক্ষমতায়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স ও ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ, সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ ও ওয়াসার সম্মিলিতভাবে চৌচালা হয়ে রিং রোড সংযোগ সড়কের সমাধান, পাহাড়ী ছরা ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ইত্যাদি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
# এন ইউ
১১টি ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারে দেশের মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র বিস্তারিত
চট্টগ্রামের বন্দর থানার নিমতলা এলাকায় লাকড়ির দোকানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে বিস্তারিত
চট্টগ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগুলো শিক্ষার্থী বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে। বিস্তারিত
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর (সোমবার) থেকে দুপুরে করোনা টিকা বিস্তারিত
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিস্তারিত
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৮২ জন। যা নমুনা পরীক্ষা তুলনায় ৫ দশমিক ৫৩ বিস্তারিত
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে যানজটে আটকে পড়ায় ১৩ হকারকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা বলছেন, বিস্তারিত
প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে জনস্বার্থবিরোধী হাসপাতাল নির্মাণ করে সিআরবি ধ্বংসের চক্রান্ত বিস্তারিত
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০৬ জনের। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৬৬৬ বিস্তারিত
© Copyright JAGORON.NEWS
Developed By Muktodhara Technology Limited