শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৭, ২০২০ ১২:৫০
১০ বছরের সাজানো সংসার ছিল মৌসুমীর। দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে গার্মেন্টসে কাজ করতেন তিনি। দু’ চোখে স্বপ্ন ছিল সন্তানরা শিক্ষিত হবে, স্বামী সুপথে চলবে আর সংসারে থাকবে শুধু শান্তি আর শান্তি। তবে স্বামী মানিকের হিংস্রতায় তার সুখ স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মানিকের দেয়া আগুনে ৩ দিন বার্ন ইউনিটের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করে শুক্রবার না ফেরার দেশে চলে গেছেন মৌসুমী। শেষ বিদায়ের আগে প্রিয় দুই সন্তানের মুখও দেখে যেতে পারেননি চির অভাগা এ নারী। গতকাল শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ফতুল্লার মাসদাইরের ভাড়া বাড়িতে তার মরদেহ আনা হয়। বাদ মাগরিব জানাযা শেষে মাসদাইর সিটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মৌসুমীর মা আয়েশা বেগম জানান, তার মেয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে ফতুল্লার পশ্চিম মাসদাইর প্রধান বাড়ির পাশে জামালের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করতো আর তার স্বামী মানিক রঙের কাজ করতো। রঙের কাজ নিয়মিত থাকে না বলে কিছু দিন আগে তার ও মেয়ের জমানো ৯০ হাজার টাকা মানিককে দেয়া হয়েছে। তিনি ওই টাকা দিয়ে মাসদাইর বেকারি মোড় এলাকায় মুদি ও চা দোকান দেয়। এ চায়ের দোকান থেকেই মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় হয় সোনালীর সঙ্গে। সোনালী আগে থেকেই টিকটক করতো। মানিকও সোনালীর সঙ্গে যোগ দিয়ে টিকটক আরম্ভ করে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক হয়। পরে সোনালীকে বিয়ে করে ইসদাইরে ভাড়া বাসায় বাস শুরু করে মানিক। এরপর থেকে মৌসুমী আর দুই সন্তানের সঙ্গে সব যোগাযোগ ছেড়ে দেয় তিনি।
তিনি জানান, কাকুতি মিনতি করে, নানাভাবে চেষ্টা করেও স্বামীকে তার স্বপ্নের গৃহে ফেরাতে পারেননি মৌসুমী। তবে হাল ছেড়েও দেননি। এক পর্যায়ে স্বামীর মোবাইলে কল করে মৌসমুী বলেন, মেয়ে মারিয়াকে খুঁজে পাচ্ছি না। তুমি তাড়াতাড়ি আসো। এ কথা শুনে মাসদাইরের ভাড়া বাসায় ফেরে মানিক। বাড়িতে আসার পর দুই সন্তানকে দেখে বুঝতে পারে মৌসুমী তাকে বাসায় ফেরাতে এ বুদ্ধি করেছে। এরপর সে এখানে বাস করতে শুরু করে। তবে কয়েক দিনের মাথায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় প্রতিদিনই দুইজনের মধ্যে ঝগড়া হতো। ২২ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে মৌসুমীর শরীরে আগুন দিয়ে ১০ বছর বয়সী ছেলে মইন ও ৯ বছর বয়সের মারিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায় মানিক। মৌসুমীর স্বজনদের দাবি, মানিক রঙের কাজ করতো সম্ভব রঙের ক্যামিকেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
মৌসুমীর মামা তাজুল ইসলাম জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেলে মারা যান মৌসুমী। চিকিৎসকরা আগেই বলেছিলেন, মৌসুমীর শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে।
মৌসুমীর মা আয়েশা বেগম বলেন, আমি মাত্র দেড়শ’ টাকা রোজে ঝুট বাছাইয়ের কাজ করি। পাশাপাশি বাসা বাড়িতেও কাজ করি। সেই কষ্টের টাকা জমিয়ে মেয়ের জামাইকে দিয়েছি যাতে মেয়েকে সুখে রাখে। আমার মেয়েও গার্মেন্টসের কাজে একদিনও কামাই দিতো না। কষ্টের টাকা জমিয়ে তিনি স্বামীকে দিয়েছে ব্যবসা করতে আর মানিক সেই টাকা দিয়ে অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, মৌসুমীর মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড হয়েছে। মৌসুমীর স্বজনরা যদি অভিযোগ করে তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হবে।
মানিক কুমিল্লা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের পারাতলি গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে। মৌসুমী নীলফামারী সদরের খোকসাবাড়ির রামখোলা এলাকার জিন্নাত আলীর মেয়ে। মৌসুমীর বাবা জজ মিয়া প্রতিবন্ধী। তাই তিনি চট্টগ্রামের এক আত্মীয়ের আশ্রয়ে থাকেন। খুব ছোট বেলায় মৌসুমী নিয়ে তার মা আয়েশা বেগম নারায়ণগঞ্জে এসে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করে একমাত্র মেয়েকে বড় করেছেন।
ঢাকা থেকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনে দুজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিস্তারিত
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে নিজের স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে নির্জন চরের কাশবনে ফেলে দিয়েছেন বিস্তারিত
নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা ও ধাওয়ার সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি বিস্তারিত
ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় গত বছর একটি আলোচিত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির বিস্তারিত
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় মাকে নির্যাতন করায় ছেলে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে বিস্তারিত
নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচ বিস্তারিত
র্যাংকস এফসি প্রোপার্টিস লিমিটেডের সিইও প্রকৌশলী তানভীর শাহরিয়ার রিমনের ছবি ব্যবহার বিস্তারিত
প্রায় পাঁচ মাস আগে (২৭ মার্চ) নিজ কক্ষে এক ক্যাবল ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় বিস্তারিত
পাবজি, ফ্রি ফায়ারসহ ক্ষতিকর অনলাইন গেমস দেশে বন্ধ করতে কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি বিস্তারিত
© Copyright JAGORON.NEWS
Developed By Muktodhara Technology Limited