শিরোনাম

১০ বছরে ১ লাখ কোটি টাকা সুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক জাগরণ ডট নিউজ

আপডেট: ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮ ০১:৩৪

image

এবারের জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণে যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যায় মন্ত্রী, সাংসদসহ তাঁদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা অর্থাৎ ধনি মানুষেরা ব্যাপক হারে সঞ্চয়পত্র কিনে রেখেছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রামীণ সঞ্চয় আহরণ, সঞ্চয় কার্যক্রমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা এবং সঞ্চয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সঞ্চয়পত্র চালুর উদ্দেশ্য। বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা।

জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্পগুলোর বিক্রয় পরিস্থিতি ও সুদ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী বলছে, সরকার ১০ বছরে সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে সুদ দিয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত জাতীয় সঞ্চয় স্কিমে (কর্মসূচি) সরকারের পুঞ্জীভূত দায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কয়েকটি বন্ডসহ বর্তমানে ১১ ধরনের সঞ্চয় কর্মসূচি চালু রয়েছে। এর মধ্যে ধনি মানুষেরা যেসব সঞ্চয়পত্র কিনে রাখেন, সেগুলোতেই সুদের হার বেশি। আইআরডির তথ্য বলছে, সরকারকে বেশি সুদ দিতে হয় পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে। এগুলোতে সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৫ সালের মে মাসের আগে এগুলোতে সুদের হার আরও ২ শতাংশ বেশি ছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সাধারণ মানুষ এই উচ্চ সুদের ভাগীদার হতে পারলেও বেশি সুবিধা নিচ্ছেন ধনিরা। এই শ্রেণির মধ্যে রয়েছেন সমাজের প্রভাবশালী অংশ অর্থাৎ মন্ত্রী, সাংসদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আইনজীবী, আমলা, এমনকি অবসরপ্রাপ্ত আমলারা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অবশ্য দুই বছর ধরে বলে আসছেন যে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বড়জোর ব্যাংকে আমানতের সুদের হারের চেয়ে ১ থেকে ২ শতাংশ বেশি থাকতে পারে। নীতিগতভাবে চাইলেও তিনি আর কমাতে পারেননি এই হার। আগামী নির্বাচনের পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে কয়েক দিন আগে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

যোগাযোগ করলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার যতই সাধারণ মানুষের কথা বলুক না কেন, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের সুবিধাভোগী মূলত প্রভাবশালীরা। আর হলফনামায় শুধু রাজনীতিবিদদের একটি চিত্র উঠে এসেছে, অন্য প্রভাবশালীদের নয়। সঞ্চয়পত্রের বিপরীতে ১০ বছরে যদি সরকার ১ লাখ কোটি টাকা সুদ দিয়ে থাকে, এর যৌক্তিক কারণ ছিল না। কারণ, ১ লাখ কোটি টাকা সুদের ৯০ শতাংশই গেছে প্রভাবশালীদের কাছে।’

আইআরডির সভায় ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে ১০ বছরের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দেখা যায়, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের মোট জমার পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ৩৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ৩৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে মূল টাকা পরিশোধে। মোট জমা থেকে মূল টাকা বাদ দিয়ে পাওয়া যায় নিট জমার পরিমাণ। ওই অর্থবছরে নিট জমার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৬৮২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর সুদ বাবদ ব্যয় ৭ হাজার ১২৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

১০ বছরের ব্যবধানে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট জমা দাঁড়ায় ৭৮ হাজার ৭৮৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এই অর্থবছরে মূল অর্থ পরিশোধ করা হয় ৩২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা এবং সুদ পরিশোধ করা হয় ২০ হাজার ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সেই বিবেচনায় নিট জমা হয় ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।

তবে সরকারকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ সুদ গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের করের টাকা থেকে। প্রতিবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদ বাবদই বড় অঙ্কের টাকা বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা কমিটি (সিডিএমসি) নামে যে কমিটি রয়েছে, সেই কমিটির প্রায় সব বৈঠকেই বলা হয় যে সরকারের ঋণ ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে সঞ্চয়পত্রের এই উচ্চ সুদের কারণে। অন্যদিকে কালোটাকার মালিকদের জন্যও সঞ্চয়পত্র কিনে রাখা তুলনামূলক ভালো বিনিয়োগ। কারণ, গ্রাহকদের কাছে তাঁদের অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হয় না।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সামছুন্নাহার বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো খাতকে ঢেলে সাজাতে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার প্রতিফলন দেখা যাবে আগামী বছরে।’

কয়েক মাস আগে অর্থ বিভাগে পাঠানো এক প্রস্তাবে সঞ্চয় অধিদপ্তর বলেছিল, কয়েকটি পদক্ষেপ নিলে সংকট থেকে মুক্তি মিলতে পারে। এগুলো হচ্ছে যুগ্ম নামে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ বন্ধ রাখা, নাবালকের নামে ও প্রতিষ্ঠানের কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করা, বিক্রির উচ্চসীমা ৩০ লাখ টাকায় নামিয়ে আনা এবং জাতীয় পরিচয়পত্রকে বাধ্যতামূলক করা। এ প্রস্তাব কার্যকর হতে দেননি সরকারেরই নীতিনির্ধারকেরা। কারণ, মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত যাঁরা নেবেন, তাঁরাও সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের সুবিধাভোগী।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক অর্থনীতিতে নীতিনির্ধারণে আমলারা একটা বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। সুদের হার কমাতে তাঁরাও বড় বাধা। আর এখন শোনা যাচ্ছে, সাধারণ মানুষকে সঞ্চয়পত্র কিনতেই দেওয়া হচ্ছে না।’

image
image

রিলেটেড নিউজ


এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব গ্রেপ্তার

১৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান মুফতি রাগীব আহসান ও বিস্তারিত


চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার 

সরকার চিনির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে পরবর্তী আদেশ বিস্তারিত


ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে 'বিশেষ সুবিধা' প্রত্যাহার

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের সময় ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধে যে বিশেষ ছাড় বিস্তারিত


রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ

ক‌রোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ একের পর এক রেকর্ড বিস্তারিত


কনটেইনার পরিবহনের বৈশ্বিক তালিকায় নয় ধাপ পিছিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর

করোনার কারণে গত বছর বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহনে ধাক্কা লেগেছিল। সেই ধাক্কায় বৈশ্বিক বিস্তারিত


আরও ১ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি

আরও ৯৪ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য ২৪ প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে সরকার। বিস্তারিত


ধান-চালের মান নিয়ে আপস করা হবে না: খাদ্যমন্ত্রী

২৭ টাকা কেজি দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। ধান ও চালের কোয়ালিটির সঙ্গে বিস্তারিত


বোরো সংগ্রহ: কৃষকের বাড়ল কেজিতে ১ টাকা, মিলারদের ৩ টাকা

কৃষকের জন্য কেজিতে এক টাকা এবং মিলারদের জন্য কেজিতে তিন টাকা দাম বাড়িয়ে এবারের বোরো বিস্তারিত


‘থার্টি আন্ডার থার্টি’: ফোর্বসের তালিকায় বাংলাদেশের ৯

এশিয়ার ২২ দেশের সেরা ৩০০ তরুণ উদ্যোক্তার তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের নয় জন। এই বিস্তারিত


image
image

নামাজের সময়সূচি

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত

এক ক্লিকে বিভাগীয় খবর

আবহাওয়া

ক্যালেন্ডার

March 2017
M T W T F S S

চট্টগ্রাম বন্দরের সিডিউল

বিমান বন্দরের সিডিউল


Cities_image
Cities_image

জোয়ার ভাটা

Cities_image