শিরোনাম
ডেস্ক রিপোর্ট জাগরণ ডট নিউজ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০১৯ ১৯:০১
ক্যাসিনো গডফাদার ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের বিষয়ে ধোঁয়াশা যেন কাটছেই না। তার গ্রেফতার নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কেউ বলছেন সম্রাট ইতিমধ্যে আটক হয়েছেন। কেউ বলছেন যুবলীগের এই প্রভাবশালী নেতাকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার নাও দেখানো হতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো সম্রাটের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলছে না। ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের পক্ষ থেকেও তাকে গ্রেফতার করা হবে কিনা সেটি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না। এ বিষয়ে কৌশলী উত্তর দিচ্ছেন সরকারের মন্ত্রীরা। তবে সম্রাট গোয়েন্দাজালে আছেন- এ বিষয়ে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে তাকে শেষ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হবে কিনা, এ নিয়ে জনমনে সেই পুরনো সন্দেহ ফের উঁকি দিচ্ছে।
ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের গ্রেফতার প্রশ্নে মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ওয়েট করেন, এত তাড়াহুড়া করছেন কেন।’ ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে সম্রাটকে ছাড় দেয়া হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, কাউকে ছাড় দেব এমন কোনো কথা আমরা বলিনি। যাকে আপনি গ্রেফতার করবেন, সেটা তদন্ত করে উপযুক্ত প্রমাণ নিয়েই গ্রেফতার করার মতো অবস্থা হলে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। এবং বলা আছে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখানে ব্যক্তিবিশেষ কোনো বিষয় নয়। ব্যক্তি যেই হোক, অপকর্ম করলে সাম্প্রতিক অভিযানের টার্গেট হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্রাটকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না- এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যিনি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি নিজেই বলেছেন, ওয়েট অ্যান্ড সি (অপেক্ষা করুন এবং দেখুন কী হয়)। কাজেই ওয়েট করেন এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন?
ক্যাসিনো সম্রাটের গ্রেফতার নিয়ে চলছে লুকোচুরি খেলা। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে প্রশাসন। তবে ইঙ্গিতটি নাকচ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, এসব ক্ষেত্রে নতুন করে সবুজ সংকেতের প্রয়োজন নেই। সব সংকেত নিয়েই তারা মাঠে নেমেছেন। সম্রাট তাদের নজরেই আছেন। তিনি গোয়েন্দাজালে আটকা পড়েছেন। এখন এই জাল কেটে বের হওয়ার সুযোগ অনেক কম।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ সংক্রান্ত প্রশ্নের কৌশলী উত্তর দিয়েছেন। রোববার ওবায়দুল কাদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘প্লিজ, ওয়েট অ্যান্ড সি’।
শনিবার আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘অপেক্ষা করুন, যা ঘটবে দেখবেন। আপনারা অনেক কিছু বলছেন, আমরা যেটি বলছি ‘সম্রাট’ হোক আর যেই হোক, অপরাধ করলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব। 'আমি এটি এখনও বলছি- সম্রাট বলে কথা নয়; যে কেউ আইনের আওতায় আসবে। আপনারা সময় হলেই দেখবেন।’
সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর এমন কৌশলী বক্তব্যে সম্রাটের গ্রেফতার করা না করা নিয়ে দোলাচল বেড়েছে। তার গ্রেফতারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কিছু বলছেন না।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সম্রাট গ্রেফতার এড়াতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তদবির করার পাশাপাশি নিজের অসুস্থতার বিষয়টিও তুলে ধরে তিনি বলছেন, তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। এ কারণে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চান।
এ বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্রাটের অসুস্থতার ভুয়া ছবি ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি এখনকার ছবি নয়। ওই ছবিতে দেখা যায়, অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের বেডে তিনি শুয়ে আছেন।
এই ছবিটি হয় এডিট করা অথবা অনেক আগের ছবি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গ্রেফতার এড়ানোর অংশ হিসেবে সম্রাট তার লোকজন দিয়ে এসব করাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এর বাইরেও আরও অনেকভাবেই তিনি সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন।
তদবির করছেন অনেকের কাছে। যাতে তাকে গ্রেফতার করা না হয়। তাকে বিদেশে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। এ জন্য নানা অঙ্কের অর্থের প্রস্তাব ও প্রলোভনও দেখাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, যারা সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। এসব বিভ্রান্তি ছড়িয়ে চলমান অভিযানকে তারা বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। কারা কী উদ্দেশ্যে এগুলো ছড়াচ্ছে, এ বিষয়েও অনুসন্ধান চলছে।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামে সম্রাটের পক্ষে তদবির চলছে। কয়েকজন নেতা বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, সম্রাট গ্রেফতার হলে ঢাকায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়বে। বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রাম রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করাটা কঠিন হয়ে পড়বে। বিষয়টি কিছুটা আমলে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। এ কারণেই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। যুবলীগের আরেক নেতা খালেদ মাহমুদের গ্রেফতারের পরই তাকে গ্রেফতারের কথা ছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরুর পর মাদক, অস্ত্র ও মানি লন্ডারিং আইনে ১৭টি মামলা হয়েছে। প্রায় প্রতি ঘটনার সঙ্গে সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা আছে। এসব ঘটনার সঙ্গে অনেক রাঘববোয়াল জড়িত বলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে। এরই মধ্যে অনেকের নামও প্রকাশিত হয়েছে। ১৭টি মামলায় সম্রাটের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়া গেলও তাকে এখনও গ্রেফতার করার খবর নেই। সম্রাট দেশে আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিশ্চিত হলেও তাকে ধরা হচ্ছে না।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘ক্যাসিনোসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে।
সোমবার অনলাইন ক্যাসিনোর প্রধান সেলিম প্রধানকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অপরাধীদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে তাদের গ্রেফতার করা হবে।’
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানীর ক্যাসিনোগুলোতে অভিযান শুরু করে র্যাব-পুলিশ। ওই দিনই ঢাকার মতিঝিলের ফকিরাপুল ইয়াংমেনস ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রে র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। পর দিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেফতার করা হয় কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় ঠিকাদার জিকে শামীম, যিনি ও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। এরা সবাই সম্রাটের অবৈধ ব্যবসার জোগানদাতা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় মোহামেডান, আরামবাগ, দিলকুশা, ওয়ান্ডারার্স, ভিক্টোরিয়া ও ফকিরেরপুল ইয়াংমেনস ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনোর ছড়াছড়ি। এর মধ্যে ইয়াংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্রাটের শিষ্য খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। বাকি পাঁচটি ক্লাবে ক্যাসিনো চালাতেন সম্রাটের লোকজন।
সম্রাটের ক্যাসিনোর দেখাশোনা করতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক ওরফে সাঈদ। তারা এক বছর আগে পল্টনের প্রীতম–জামান টাওয়ারে ক্যাসিনো চালু করেছিলেন। মমিনুল হক এখন সিঙ্গাপুরে।
ফায়ার সার্ভিসের লোকবল ১৬ হাজার থেকে ২৫ হাজারে উন্নীত করার জন্য এর সাংগঠনিক কাঠামো বিস্তারিত
আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির পক্ষ থেকে চারটি শর্ত তোলা হয়েছে। দলীয় সরকারের বিস্তারিত
কুমিল্লা- ৭ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিস্তারিত
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বিস্তারিত
''অন্ধ সমালোচনা আর বিষোদগারের রাজনীতি বিএনপির জন্য ফ্রাংকেনস্টাইন হয়ে নিজেদেরই আঘাত বিস্তারিত
পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সংসদীয় কার্যক্রম সম্পর্কে দক্ষতা বৃদ্ধির প্রতি বিস্তারিত
বিএনপির আন্দোলনের হাঁকডাককে আন্দোলন-বিলাস মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিস্তারিত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিস্তারিত
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বিস্তারিত
© Copyright JAGORON.NEWS
Developed By Muktodhara Technology Limited